ঢাকা ১০:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ২৬ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সালথায় যৌতুকের দাবীতে গৃহবধূকে মারধর, হাসপাতালে ভর্তি

আরিফুল ইসলাম, সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ

ফরিদপুরের সালথায় যৌতুকের দাবিতে এক গৃহবধূকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী ঐ গৃহবধূর নাম তানজিলা আক্তার (২৫)। রোববার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের কাঁঠালবাড়িয়া এলাকায় তানজিলার শ্বশুর বাড়িতে হামলা ও মারপিটের এই ঘটনা ঘটে। সে উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের কাঁঠালবাড়িয়া এলাকার পিকুল মিয়ার কন্যা এবং স্থানীয় গোলাম হায়দারের স্ত্রী। বর্তমানে ঐ গৃহবধূ ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে। এই বিষয়ে সালথা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

জানা যায়, প্রায় ৬-৭ বছর আগে তানজিলা আক্তারের সাথে বিয়ে হয় একই এলাকার ছোফেল মোল্লার ছেলে গোলাম হায়দারের সাথে। বিয়ের পরে মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে তানজিলার বাবা দামী গহনাসহ আসবাবপত্র ও নগদ টাকা দেয়। কিন্তু আরও টাকার লোভে তানজিলার শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে গালিগালাজ ও মারপিট করতো। এরই মাঝে তানজিলা ও গোলাম হায়দারের ঘরে জন্ম নেয় জমজ এক ছেলে ও মেয়ে। এক পর্যায়ে যৌতুকের দাবিতে বেশি মারধর করলে তানজিলার পরিবার তাকে ছাড়িয়ে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে আসে।

এরপর স্থানীয়রা ও গোলাম হায়দার ছোট সন্তানের কথা ভেবে আবার তানজিলাকে আবার গোলাম হায়দার আনুষ্ঠানিক ভাবে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে প্রবাসে পাড়ি জমায়। গোলাম হায়দার দুবাই থেকে ইতালি যাবে এই জন্য তানজিলাকে টাকার জন্য তার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে চাপ দিতে থাকে। রোববার বিকেলে পুনরায় টাকার জন্য চাপ দিলে তানজিলা তা এনে দিতে অস্বীকার করে। এরপরই তার শ্বশুর ছোফেল মোল্লা (৬০) শাশুড়ি করিমন নেছা (৫০), চাচাতো ভাসুর হবি মোল্লা ও ছলেমান মোল্লাসহ কয়েকজনে হামলা চালিয়ে তাকে মারপিট করে। এসময় তানজিলা সন্তানদের নিয়ে আসতে গেলে তার সন্তানদের রেখে দেয় এবং মোবাইল, গহনা, টাকা-পয়সা নিয়ে পার্শ্ববর্তী বালুর মাঠে ফেলে দেয়। এরপর পরিবারের সদস্যরা খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

তানজিলা আক্তারকে যৌতুকের দাবিতে কয়েকদফা মারপিটের ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তানজিলার ভাসুর স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ায় কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না বলে জানা যায়। ভুক্তভোগী তানজিলার পরিবার ও স্থানীয়রা অভিযুক্ত শ্বশুর-শ্বাশুড়ি ও ভাসুরদের বিচার দাবি করেছে।

এই বিষয়ে অভিযুক্ত ছোফেল মোল্লা বলেন, আপনি খোঁজ খবর নিয়ে দেখেন আমি কেমন মানুষ। আমি বাড়িতে ছিলাম না, আমার ছেলের বউই আমার স্ত্রীকে মারধর করেছে।

সালথা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আতাউর রহমান বলেন, শ্বশুর-শ্বাশুড়ি মিলে পুত্রবধূকে মারধর করেছে এই বিষয়ে একটা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৭:৫১:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪
৪১ বার পড়া হয়েছে

সালথায় যৌতুকের দাবীতে গৃহবধূকে মারধর, হাসপাতালে ভর্তি

আপডেট সময় ০৭:৫১:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪

ফরিদপুরের সালথায় যৌতুকের দাবিতে এক গৃহবধূকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী ঐ গৃহবধূর নাম তানজিলা আক্তার (২৫)। রোববার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের কাঁঠালবাড়িয়া এলাকায় তানজিলার শ্বশুর বাড়িতে হামলা ও মারপিটের এই ঘটনা ঘটে। সে উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের কাঁঠালবাড়িয়া এলাকার পিকুল মিয়ার কন্যা এবং স্থানীয় গোলাম হায়দারের স্ত্রী। বর্তমানে ঐ গৃহবধূ ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে। এই বিষয়ে সালথা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

জানা যায়, প্রায় ৬-৭ বছর আগে তানজিলা আক্তারের সাথে বিয়ে হয় একই এলাকার ছোফেল মোল্লার ছেলে গোলাম হায়দারের সাথে। বিয়ের পরে মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে তানজিলার বাবা দামী গহনাসহ আসবাবপত্র ও নগদ টাকা দেয়। কিন্তু আরও টাকার লোভে তানজিলার শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে গালিগালাজ ও মারপিট করতো। এরই মাঝে তানজিলা ও গোলাম হায়দারের ঘরে জন্ম নেয় জমজ এক ছেলে ও মেয়ে। এক পর্যায়ে যৌতুকের দাবিতে বেশি মারধর করলে তানজিলার পরিবার তাকে ছাড়িয়ে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে আসে।

এরপর স্থানীয়রা ও গোলাম হায়দার ছোট সন্তানের কথা ভেবে আবার তানজিলাকে আবার গোলাম হায়দার আনুষ্ঠানিক ভাবে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে প্রবাসে পাড়ি জমায়। গোলাম হায়দার দুবাই থেকে ইতালি যাবে এই জন্য তানজিলাকে টাকার জন্য তার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে চাপ দিতে থাকে। রোববার বিকেলে পুনরায় টাকার জন্য চাপ দিলে তানজিলা তা এনে দিতে অস্বীকার করে। এরপরই তার শ্বশুর ছোফেল মোল্লা (৬০) শাশুড়ি করিমন নেছা (৫০), চাচাতো ভাসুর হবি মোল্লা ও ছলেমান মোল্লাসহ কয়েকজনে হামলা চালিয়ে তাকে মারপিট করে। এসময় তানজিলা সন্তানদের নিয়ে আসতে গেলে তার সন্তানদের রেখে দেয় এবং মোবাইল, গহনা, টাকা-পয়সা নিয়ে পার্শ্ববর্তী বালুর মাঠে ফেলে দেয়। এরপর পরিবারের সদস্যরা খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

তানজিলা আক্তারকে যৌতুকের দাবিতে কয়েকদফা মারপিটের ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তানজিলার ভাসুর স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ায় কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না বলে জানা যায়। ভুক্তভোগী তানজিলার পরিবার ও স্থানীয়রা অভিযুক্ত শ্বশুর-শ্বাশুড়ি ও ভাসুরদের বিচার দাবি করেছে।

এই বিষয়ে অভিযুক্ত ছোফেল মোল্লা বলেন, আপনি খোঁজ খবর নিয়ে দেখেন আমি কেমন মানুষ। আমি বাড়িতে ছিলাম না, আমার ছেলের বউই আমার স্ত্রীকে মারধর করেছে।

সালথা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আতাউর রহমান বলেন, শ্বশুর-শ্বাশুড়ি মিলে পুত্রবধূকে মারধর করেছে এই বিষয়ে একটা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।